তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পটভূমি
২০১১ সালে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার জন্য সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয়। এই সংশোধনীটি সরকার বিরোধী দলগুলোর বিরোধিতা সত্ত্বেও জাতীয় সংসদে পাস হয় এবং এটি সংবিধানে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ১৯৯৬ সালে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এবং ২০১১ সালের পঞ্চদশ সংশোধনীতে এটি বাতিল করা হয়, যার ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাপক পরিবর্তিত হয়।
বিরোধী দলগুলোর প্রতিবাদ ও নির্বাচনে বয়কট
পঞ্চদশ সংশোধনী আনার পর রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো এই পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। ২০১৪ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পর, বিরোধী দলগুলো ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করে, যার ফলে দেশের রাজনৈতিক সহিংসতা বৃদ্ধি পায়।
ধর্মনিরপেক্ষতার পুনর্বহাল ও জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্বীকৃতি
পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা পুনর্বহাল করা হয়। এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়, যা দেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়।
আইনগত বিতর্ক ও সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা
পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশের আদালতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। সংবিধানের উপর এই সংশোধনীর প্রভাব নিয়ে আদালতে মামলাগুলোর শুনানি চলছে, এবং তা সরকারের নির্বাচনকালীন ব্যবস্থা নিয়ে নতুন নির্দেশনা প্রদান করতে পারে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পুনঃপ্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা
বর্তমানে এই সংশোধনীটি বাতিল করার জন্য কিছু রাজনৈতিক দল রিভিউ আবেদন করেছেন, যার ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরবে কিনা তা আগামী দিনে আদালতের রায়ের উপর নির্ভর করবে।
উপসংহার
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এবং পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আনা পরিবর্তনগুলি দেশের সংবিধান এবং রাজনৈতিক পরিবেশে গভীর প্রভাব ফেলেছে। পরবর্তী সময়ে নির্বাচনকালীন ব্যবস্থা নিয়ে সমাধান না আসলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
ট্যাগ
#বাংলাদেশ #পঞ্চদশ_সংশোধনী #তত্ত্বাবধায়ক_সরকার #রাজনীতি #শেখ_মুজিব #ধর্মনিরপেক্ষতা #সংবিধান #আদালত #বিএনপি #আওয়ামী_লীগ
মন্তব্য করুন