বিজেপি সরকারের সিদ্ধান্ত ও বিতর্ক
ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তন করে “শ্রীভূমি” করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি সরকার। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নেতৃত্বে এই নাম পরিবর্তনের ঘোষণার পর বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেলেও জেলার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সমালোচকরা একে ধর্মীয় মেরুকরণের প্রচেষ্টা বলে বর্ণনা করছেন।
শ্রীভূমি নাম: রবীন্দ্রনাথের সংযোগ কতটা বাস্তব?
বিজেপি দাবি করছে, “শ্রীভূমি” নামটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া। তবে ইতিহাসবিদরা জানাচ্ছেন, ১৯১৯ সালে রবীন্দ্রনাথ তার একটি নামহীন কবিতায় “শ্রীভূমি” শব্দটি উল্লেখ করেছিলেন। এই কবিতা সিলেট ও সুরমা উপত্যকার সৌন্দর্য নিয়ে লেখা হলেও করিমগঞ্জের সঙ্গে এর কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই।
করিমগঞ্জের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
করিমগঞ্জের নামকরণ হয়েছে মুহম্মদ করিম চৌধুরীর নামে। এটি ১৮৮৪ সালে মহকুমা এবং ১৯৮৩ সালে জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির সময় গণভোটের মাধ্যমে সিলেটের একটি অংশ পাকিস্তানে চলে গেলেও করিমগঞ্জ ভারতে থেকে যায়।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, করিমগঞ্জের নাম পরিবর্তন বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের একটি অংশ। উত্তরপ্রদেশসহ অন্যান্য রাজ্যে ইসলামি নাম পরিবর্তনের ধারার সঙ্গেই এই সিদ্ধান্ত যুক্ত। তবে বিজেপি নেতারা দাবি করছেন, এটি শুধুই ঐতিহাসিক মূল্যায়নের প্রয়াস।
নাম পরিবর্তন ঘিরে মতবিরোধ
যদিও শ্রীভূমি নামটি বরাক-সুরমা উপত্যকার বৃহৎ অঞ্চলের ঐতিহ্যকে নির্দেশ করে, শুধুমাত্র করিমগঞ্জ জেলাকে এই নাম দেওয়ার কারণে বৃহত্তর এলাকার বাসিন্দারা এই ঐতিহ্যের ব্যবহারিক অধিকার থেকে বঞ্চিত বলে মনে করছেন।
ট্যাগস:
করিমগঞ্জ, শ্রীভূমি, আসাম রাজনীতি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিজেপি, নাম পরিবর্তন, ধর্মীয় মেরুকরণ, বরাক উপত্যকা, ভারত রাজনীতি
মন্তব্য করুন